প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের প্রাক্কালে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ‘ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা’ ঘোষণা করে, যেখানে গঠনমূলক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ, আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনীতি ও সমৃদ্ধিতে তা ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত ২৪ এপ্রিল ২০২৩ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ রূপরেখা সম্পর্কিত বক্তব্য তুলে ধরেন। বহুল প্রতীক্ষিত এ রূপরেখা বাংলাদেশের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। আর এই রূপরেখায় বাংলাদেশ আবারও সামনে নিয়ে এল তার নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান, যেখানে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন রয়েছে একেবারে কেন্দ্রে। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সংযুক্ত করতে চায় সম্ভাব্য সবাইকে।
বহু প্রতীক্ষিত এ রূপরেখা সম্পর্কে ঘোষণা এসেছিল বিভিন্ন পর্যায়ে। বাংলাদেশের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও বেশ কিছু দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল প্রণয়ন করে। আসিয়ান প্রণয়ন করে রূপরেখা। বাংলাদেশ তাই বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ করে নিজস্ব ধারণাসংবলিত এ রূপরেখা প্রণয়ন করল।
যখন সারা বিশ্ব ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান-সংকট ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতার এক নতুন রূপ দেখতে পাচ্ছে, যেখানে মেরূকরণ আবারও প্রকট হয়ে উঠেছে, ক্রমশ ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নানা জোট ও সমঝোতা, ঠিক তখন বাংলাদেশ তার অবস্থান স্পষ্ট করল সারা বিশ্বের কাছে; আর তা নিজস্ব ধারণার ওপর নির্ভরশীল থেকে প্রতিষ্ঠিত ভারসাম্যের নীতিতে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে বাংলাদেশ তার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে। তা ছাড়া ঢাকা যুক্তরাষ্ট্র, কোয়াডের অন্যান্য দেশ ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে আন্তরিক ও অংশীদারত্বমূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। চীনের সঙ্গেও রয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতার এক কার্যকরী সম্পর্ক। আর তাই এ রূপরেখার গুরুত্ব আলাদাভাবে আলোচনার দাবি রাখে যেখানে বাংলাদেশের স্বকীয়তা প্রকাশ পেয়েছে আবারও।
এই রূপরেখার দুটি দিক বিশেষ দৃষ্টিপাতের দাবিদার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ তার সঠিক অবস্থান বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পেরেছে। বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছিল বহুদিন ধরেই, যেখানে বাংলাদেশকে কোনো একটি নির্দিষ্ট মেরু কিংবা গোষ্ঠীবদ্ধ করে বাকি সব বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটানো ছিল মূল লক্ষ্য। সেখানে বাংলাদেশ এই রূপরেখার মাধ্যমে সামনে নিয়ে এল নিজের স্বকীয় পররাষ্ট্রনীতি চর্চার সুদীর্ঘ ঐতিহ্য। বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রণয়ন করা নীতিমালার আলোকে নয়, বাংলাদেশের নীতি নিজস্ব ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত- এটিই যেন আরেকবার প্রমাণিত হলো। এই রূপরেখার মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় আলোচনায় নিজস্ব ধারণার বহিঃপ্রকাশে এক নতুন দলিল পেল। নীতিনির্ধারকদের জন্যও এটি একটি দালিলিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে, বিশেষ করে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় যুক্ত হবে এক স্থিতিশীলতা। এর প্রভাব লক্ষ্য করা যাবে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমষ্টিগত অবস্থা আলোচনার ক্ষেত্রেও। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের বিদ্যমান পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক নিয়ামকগুলোকে মাথায় রেখে যেহেতু এটি প্রণীত হয়েছে, তাই এটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিকতারও একটি নতুন বহিঃপ্রকাশ। তিনটি ভিন্ন দিক থেকে এই রূপরেখার ধারণাটিকে পর্যালোচনা করা যায়।
প্রথমত, যখন বাকি বিশ্ব তাদের কৌশলে বলছে এক অবাধ ও মুক্ত প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের কথা। বাংলাদেশ যুক্ত করেছে আরও কিছু বিষয়। বাংলাদেশ চাইছে সংযুক্ত ও সমৃদ্ধ এক প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল যেখানে উন্নয়ন সংঘটিত হবে সমন্বিতভাবে। কেননা, বাংলাদেশ তার রূপরেখায় যুক্ত করেছে শান্তি, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো। বাংলাদেশ এই অঞ্চলকে আরও বিস্তৃত ও সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের এক অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও বদ্ধপরিকর। তাই বাংলাদেশের কাছে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল হচ্ছে স্বাধীন, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।
দ্বিতীয়ত, এই রূপরেখায় চারটি মূলনীতির কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য। প্রথমটি হলো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদে উল্লিখিত নীতিগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার নীতির ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালনার সাংবিধানিক আদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ পরিত্যাগ এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। তৃতীয়টি, ১৯৮২ সালের সমুদ্র আইন সম্পর্কিত জাতিসংঘ কনভেনশন (ইউএনসিএলওএস)সহ প্রযোজ্য প্রাসঙ্গিক জাতিসংঘ চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলো মেনে চলা। চতুর্থটি হচ্ছে, টেকসই উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক কর্মকাণ্ড এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য গঠনমূলক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। তাই বোঝাই যাচ্ছে, এক সামগ্রিক পরিকল্পনার রূপরেখা প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার, যা বিশ্বের অন্য শক্তিগুলোর নীতিমালার থেকে ব্যতিক্রম এর ব্যাপ্তির কারণে।
তৃতীয়ত, এর উদ্দেশ্য। ১৫টি উদ্দেশ্যের কথা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রচলিত ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে- এমনটাই ধারণা করা যায় এর উদ্দেশ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে। কৌশলগত নিরাপত্তা ও সামরিক বিষয়গুলোর বাইরে গিয়ে উন্নয়নের ধারণাকে দেখার মাধ্যমে বাংলাদেশ তার শান্তির প্রতি আকাঙ্ক্ষাকে আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, যা এ অংশে তুলে ধরা হলো।
শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা
ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এই রূপরেখার ফলে দেখা দেবে অধিকতর স্থিতিশীলতা। কেননা, এই রূপরেখায় আলোচ্য হিসেবে এসেছে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলো। পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা জোরদার করা, অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং সংলাপ ও সমঝোতা জোরদার করার কারণে এই নিরাপত্তা হতে পারে আরও টেকসই। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অস্ত্র অপ্রসারণ, শান্তিরক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রচেষ্টায় অর্থবহ এবং মূল্য-চালিত অবদান বজায় রাখার মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করবে সামাজিকভাবে ও রাজনৈতিকভাবে এই রূপরেখার বাস্তবায়ন।
আন্তদেশীয় অপরাধ মোকাবিলা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত
এ অঞ্চলে সংঘটিত আন্তদেশীয় অপরাধ মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে আদর্শিক এবং ব্যবহারিক উভয় পদক্ষেপের সমর্থনের মাধ্যমে এ অঞ্চল হবে আরও নিরাপদ। যেখানে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ ও সহযোগিতা হবে বেগবান। তা ছাড়া সামুদ্রিক নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিদ্যমানব্যবস্থা জোরদার করা, সমুদ্রে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া এবং অনুসন্ধান, উদ্ধার পরিচালনা, আন্তর্জাতিক আইন, ইউএনসিএলওএস ১৯৮২-এর প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুসারে নেভিগেশন এবং ওভার-ফ্লাইটের স্বাধীনতার অনুশীলনকে সমুন্নত রাখার বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির বিকাশকে।
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ
টেকসই উন্নয়নের বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে এই রূপরেখায়, সেই লক্ষ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে উন্মুক্ত, স্বচ্ছ, নিয়মভিত্তিক বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার প্রচার, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়নের অধিকার এবং সবার জন্য অভিন্ন সমৃদ্ধির মাধ্যম, যা ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাইরে ন্যায়সংগত, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এসব কিছুর ভিত্তি হিসেবে অবশ্য কাজ করবে ভৌত, প্রাতিষ্ঠানিক, জ্বালানি, ডিজিটাল ও মানবসংযোগ বৃদ্ধি, পণ্য, পরিষেবা, মূলধন ও মানুষের চলাচলকে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সহজতর করাসহ উন্মুক্ত ও সুরক্ষিত সাইবার স্পেস এবং বহির্বিশ্বে প্রযুক্তি হস্তান্তর, উদ্ভাবনে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো।
তবে এসব কিছুর জন্য প্রয়োজন অবাধ বাণিজ্য। তাই এ অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও অবাধ বাণিজ্যপ্রবাহকে উৎসাহিত করতে এবং ভবিষ্যতের সংকট ও বিঘ্নগুলো আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে স্থিতিস্থাপক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মূল্যশৃঙ্খল গড়ে তোলার জন্য অভ্যন্তরীণ কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা ক্ষেত্রগুলোকেও নজরে রাখতে হবে।
পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সম্পদের টেকসই ব্যবহার
এসডিজি-১৪ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত উন্নয়ন অঙ্গীকারের আলোকে এ অঞ্চলে মহাসাগর, সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ, এর টেকসই ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন পদেক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা রয়েছে। এর বাইরে এ অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা, জলসংহতি এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের প্রচারে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার বিষয়েও আলোচনা রয়েছে, যার মধ্যে আঞ্চলিক বিভিন্ন অনুশীলন প্রচার করার ব্যবস্থা গৃহীত হবে। এ ছাড়া প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক কনভেনশন এবং প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস, সামুদ্রিক দূষণ এবং পরিবেশের ওপর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য, ক্ষতিকারক প্রভাবগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাস্তব কাজ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এই রূপরেখায়। তাই তো পুনর্নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ সবার জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার কথা আলোচিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং মহামারি নিয়ন্ত্রণ
ভ্যাকসিন, রোগ নির্ণয় এবং অন্যান্য চিকিৎসার মতো বৈশ্বিক জনসাধারণের জন্য নিবেদিত পণ্যগুলো সহজলভ্য করতে ভবিষ্যতের মহামারিগুলো মোকাবিলায় একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার বিকাশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার দিকে নজর দেবে সরকার।
স্মার্ট বাংলাদেশ ও উপ-আঞ্চলিকতার বিকাশ: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনে সহযোগিতা
আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার এবং পারস্পরিক উপকারী পরিপূরকতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপ-আঞ্চলিক অংশীদার এবং প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। এতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর রূপকল্পের আলোকে সবার অভিন্ন সুবিধার জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা, উদ্ভাবনে সহযোগিতা ও সহযোগিতা জোরদারকরণ হবে সহজতর।
তাই দেখা যাচ্ছে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই রূপরেখা আলোচিত হবে এক সমন্বিত ও কার্যকরী দলিল হিসেবে, যা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলভিত্তিকে। তাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি তার মূল ধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে না। তবে এখানে খেয়াল রাখতে হবে, এ অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রতিটি রাষ্ট্রের, যাদের সীমান্ত কিংবা নীতি রয়েছে এই অঞ্চলকে ঘিরে, তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আর এ লক্ষ্য নিশ্চিত করতেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ের সবকিছুই অবশ্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির উপাদান, এই রূপরেখা শুধু এক নতুন মাত্রার সংযোজন নির্দেশ করে। কেননা, বাংলাদেশ তার মূলনীতিতে দাঁড়িয়ে রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। এটি তাই স্বকীয়তা প্রকাশের এক নয়া নিয়ামক।
– ড. দেলোয়ার হোসেন: অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; প্রেষণে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োজিত।
দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত [লিংক]